সালাফে সালেহীন বা পূর্বতন মনীষীবৃন্দ ইসলামী শিক্ষার জন্য কোনো সংজ্ঞা নির্ধারণ করেন নি। তাঁরা নানা শব্দে ইসলামী শিক্ষাকে বুঝিয়েছেন। এ কারণে বর্তমান যুগে ইসলামী শিক্ষার অগ্রপথিক ও কর্ণধার আলিমগণ এর সংজ্ঞা নির্ধারণে বিভিন্ন মত ব্যক্ত করেছেন। তবে তাঁদের সবার বক্তব্যে এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণে সাযুজ্য দেখা যায়। আর সবার দৃষ্টিভঙ্গি, বৈশিষ্ট্য ও অভিরুচিগত পার্থক্যের কারণেই সংজ্ঞা নির্ধারণে এ মত ভিন্নতা দেখা দেয়। আলিম, পণ্ডিত ও ইসলামী শিক্ষার গবেষক ও লেখকগণ ইসলামী শিক্ষার কয়েকটি সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছেন। নিম্নে তার কিছু সংজ্ঞা তুলে ধরা হলো :
আবদুর রহমান নিহলাওয়ী বলেন: ‘ইসলামী শিক্ষা হলো ব্যক্তিক ও সামষ্টিক ব্যবস্থা যা ইসলামকে গ্রহণ এবং তা ব্যক্তি ও গোষ্ঠি জীবন পর্যায়ে প্রয়োগের দিকে নিয়ে যায়। অন্য কথায়, তা হলো, ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামের লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে মানুষের চেতনার উন্নয়ন এবং তার আবেগ ও আচরণকে দীনে ইসলামের ভিত্তির ওপর নির্মাণ করা।’ [আবদুর রহমান নিহলাওয়ী, উসুলুত তারবিয়্যাতিল ইসলামিয়া, পৃষ্ঠা : ২৭]
শায়খ আমীন মুহাম্মদ আউয বলেন: ‘তা হলো ইসলামী ব্যক্তিত্বের চৈন্তিক, শারীরিক ও সামাজিক সকল দিকের উন্নয়ন এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইসলামের লক্ষ্য বাস্তবায়নে ইসলামের আদর্শ ও শিক্ষা অনুযায়ী তার আচরণকে সুন্দর করা।’ [শায়খ আমীন মুহাম্মদ আউয, আসালিবুত তারবিয়া ওয়াত তালীম ফিল ইসলাম, পৃষ্ঠা : ৩৪]
জগলূল নাজ্জার বলেন:‘ইসলামী শিক্ষা হলো ইসলামের ব্যাপকতর অর্থে ইসলামের ওপর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ব্যবস্থা। আল্লাহ যেমন ইসলামের ব্যাপকার্থ প্রকাশে বলেন, আল্লাহর কাছে মনোনীত দীন একমাত্র ইসলাম।’ [জগলূল নাজ্জার, প্রাগুক্ত, পৃষ্ঠা : ৭৯]
এ ছাড়াও পরিসর বেড়ে যাবার আশংকায় আরও অনেকেরই সংজ্ঞা এখানে তুলে ধরা গেল না। তবে সবগুলোতেই যে কথাটা পাওয়া যায় তা হলো, এটি এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে সৎ ব্যক্তি তৈরি, ইসলামী শরী‘আর প্রধান উৎসগুলোর আলোকে দুনিয়া ও আখিরাতের দিক দিয়ে পূর্ণাঙ্গ মানস গঠন নিশ্চিত করা হয়।