ছাত্র সে যে স্তরেরই হোক না কেন, ইসলামী শিক্ষাকে বাদ দিয়ে শুধু বৈষয়িক শিক্ষায় তার সম্পূর্ণ সময় ব্যয় করবে, এ চিন্তাও করা যায় না। ইদানীং ইউরোপ ও আমেরিকার অধিবাসী পাশ্চাত্যের জাতিসমূহের অনুকরণে মুসলিম বিশ্বে যেসব বিদ্যালয় বা মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হতে শুরু করেছে সেগুলোতে এমনই হচ্ছে। এর ফলে ছাত্ররা কল্যাণকর জ্ঞান ও নেক আমল থেকে বঞ্চিত হবে। কারণ মানবাত্মা নগদের প্রতিই বেশি আগ্রহী; বিশেষত সে নগদটা যদি পার্থিব কিছু হয়। আর বাকির প্রতি বিরাগী। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘কখনো না, বরং তোমরা দুনিয়ার জীবনকে ভালোবাস। আর তোমরা ছেড়ে দিচ্ছ আখিরাতকে।’ [সূরা কিয়ামাহ, আয়াত : ২০-২১]
এ কারণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের হাফেজকে মুখস্তকৃত অংশটাকে বিরতহীনভাবে বারবার পাঠ করার প্রতি জোর তাকিদ দিয়েছেন। যেহেতু কুরআনে কারীম লাগামের জন্য প্রস্তুতকৃত উটের চেয়েও অবাধ্য। আবদুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: ‘তাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি কতই না খারাপ যে বলে অমুক অমুক আয়াত ভুলে গেছি। বরং তাকে ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। তোমরা কুরআন স্মরণ রেখ। কারণ উট যেমন তার রশি থেকে পালিয়ে যায় কুরআন তার চেয়েও দ্রুত চলে যায় মানুষের বক্ষ থেকে।’ [বুখারী : ৫০৩২; মুসলিম : ১৮৭৭]
হ্যাঁ, পরিপূর্ণভাবে পার্থিব জ্ঞান অর্জনে আত্মনিয়োগ করা তাদের কাছেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে যাদের জন্য আখেরাতে কোনো প্রাপ্তি নেই, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ প্রত্যাশা করে না। যারা পার্থিব জীবন নিয়ে যারা সন্তুষ্ট ও নিশ্চিন্ত। আর মুমিন, যিনি দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ প্রত্যাশী, তার তো সে সুযোগ নাই। যেহেতু মুমিন এমন এক ব্যবসায় আশ্বাসী যে ব্যবসাতে লোকসান নাই।
মুসলিমরা জাগতিক জ্ঞান নিয়ে যতই মগ্ন থাকুক না কেন, কল-কারখানা ও পরীক্ষাগারে জাগতিক জ্ঞানের যতই প্রয়োগ ঘটাক না কেন, কোনো অবস্থাতে কোনো সময়ে ফরয ইবাদত আদায়ের ব্যাপারে তাদের গাফেল হওয়ার সুযোগ নেই। আর ইলমে দীন তাদেরকে তাদের ইবাদত-বন্দেগী আদায়ের সঠিক নির্দেশনা প্রদান করে। বিশেষভাবে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের কথা বলতে হয়। সালাত হচ্ছে ইসলামের ভিত্তি। কোনো গবেষণা ল্যাবে অথবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অথবা অফিস-আদালতে থেকে সালাত পরিত্যাগ করার কোনো সুযোগ নাই।