স্টাফ রির্পোটার: ঝিনাইদহের শৈলকুপার গাছিরা রস
আহরণের জন্য খেজুর গাছ পরিচর্যায় পর তা আহরনে ব্যস্ত সময় পার
করছে। কিছু কিছু খেজুর গাছের রস আসতে শুরু করলেও কয়েকদিনের
মধ্যেই পুরোদমে রস ঘরে আসবে আর তা দিয়ে তৈরী হবে নানা উপকরণ।
গাছ কেটে যারা প্রতিনিয়ত রস আহরণ করে স্থানীয় ভাষায় তাদেরকে
গাছি বলা হয় আর যে নলের মাধ্যমে রস ফোটা ফোটা করে পড়ে তাকে
নলি বলা হয়। প্রথমে গাছের মাথার ডগা পরিস্কার করা কষ্ট হলেও এখন গাছ
থেকে রস সংগ্রহ শুরু হওয়ায় গাছির আনন্দের শেষ নেই।
দেখা যায়, একালাকায় খেজুর গাছ চাচা-ছোলার কাজ শেষ হয়েছে ।
এখন হাড়ি পাতিল ধোয়া মোছার কাজ চলছে সেইসাথে রস আহরণের
কাজ শুরু হয়েছে । তাই শীতের মৌসুম শুরু হতে না হতেই গাছিদের সব
প্রস্তুতি শেষ করে রস আহরনের পালা। এমন কোন বাড়ি নেই যে সেই
বাড়িতে খেজুরের গাছ নেই। গ্রামের প্রায় বাড়িতেই খেজুরের গাছ
তাই রস আহরনের আনন্দের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে গ্রামজুড়ে। কিছু
কিছু এলাকায় মাঠের মধ্যে তাবু টানিয়ে রস পাহারা দিচ্ছে।
গাছিরা হাতে দা নিয়ে ও কোমরে দড়ি বেঁধে প্রতিদিন বিকাল বেলা
গাছ কেটে নলির মুখে পাত্র বসিয়ে পরের দিন খুব সকালে গাছ থেকে
রসসহ পাত্র নামিয়ে ফেলে। এভাবে একে একে করে গাছ থেকে রস
সংগ্রহ করে থাকে।
বর্তমান মাঝারী সাইজের এক হাড়ি রসের দাম ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়
বিক্রি হচ্ছে।খেজুরের মিষ্টি রস যে একবার পান করেছে, তার স্বাদ কোন
দিন সে ভুলতে পারবে না। খেজুর রসের পায়েস ও ক্ষির তো খুবই মজাদার
আবার এই রস দিয়ে তৈরী হয় পাটালি, গুড়। শীত মৌসুমে প্রতিটি
গ্রামে গ্রামে গাছিরা গাছ খেকে রস আহরণ করে আর তা দিয়ে
পায়েস ও পিঠে খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। এই রসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে
সেইসাথে গুড় পাটালীর কদরও রয়েছে অনেক।খেজুরের রসের তৈরী যাবতীয়
উপকরণ এনে দেয় বাড়তি স্বাদ।
দামুকদিয়া গ্রামের গাছি আমিরুল ইসলাম বলেন, সবে মাত্র গাছ
থেকে রস সংগ্রহ শুরু হয়েছে। প্রতি বছর শীত মৌসুম এলেই আমরা
গাছ কেটে পর্যায়ক্রমে রস সংগ্রহের উপযোগী করে থাকি।আমরা
কাচা রস বিক্রি করি আবার রস থেকে গুড়ও পাটালি তৈরি করে বাজারে
বিক্রি করে থাকি। এখন আমরা রস আহরনে ব্যস্ত সময় পার করছি।
মাঠপাড়া গ্রামের গাছি আব্দুল করিম বলেন, ২০ টা খেজুর গাছ
কেটেছি । বর্তমান রস কম পাচ্ছি । ২০ গাছে আমি ১০ হাড়ি রস
পাচ্ছি । সব রস এখন কাচা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। প্রতি হাড়ি রস ২০০
থেকে ২৫০ টাকায় বিকিে করছি।
গাছিরা এখন রস আহরণ শুরু করেছে তাই তাদের মুখে হাসি ফুটছে।
প্রায় গাছিই শীত মৌসুমের জন্য অপেক্ষায় থাকে কারণ তারা এই রস
আহরণের মাধ্যমে জীবিকানির্বাহ করে।