শৈলকুপায় ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত
স্টাফ রির্পোটারঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বাংলার
ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই লাঠিখেলাকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিল উৎসবের
আমেজ।রবিবার দুপুর ১২ খেকে ৫-৩০টা পর্যন্ত ঐতিহ্যবাহী এই খেলার আয়োজন করেন উপজেলার
হাবিবপুর গ্রামে অবস্থিত দয়াল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লাব্বুল বাশার।ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলা থেকে
আগত ১২টি লাঠি খেলা দল এতে অংশ নেয়।
শৈলকুপার পৌর এলাকার হাবিবপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ১২টা থেকেই লাঠি খেলা দেখতে
দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন নানা বয়সী শত শত নারী পুরুষ। ঢাক, ঢোল আর কাঁসার ঘণ্টার শব্দে
চারপাশে সৃষ্টি হয় উৎসব মুখর পরিবেশের। প্রথমে বাদ্যের তালে তালে নানা অঙ্গভঙ্গি দেখান লাঠিয়ালরা।
এরপরই শুরু হয় মূল আকর্ষণ। দুইজন লাঠিয়াল শব্দের তালে তালে ঝাপিয়ে পড়েন একে অপরের ওপর। বাদ্য-বাজনার
তালে তালে লাঠি নিয়ে একজন আরেকজনকে আঘাত করার চেষ্টা করছেন। লাঠির আঘাত থেকে বাঁচতে
চলছে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ। এসব দেখে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠছেন দর্শকরা।
রফিকুল ইসলাম নামে এক দর্শক বলেন, অনেক দিন পর লাঠিখেলা দেখছি। ছোট থেকে বড় সবাই খেলছেন,
দেখতে খুব ভালো লাগছে। প্রত্যেক বছর যদি এমন খেলা হয় তাহলে তো খুব ভাল হয়।
আরেক দর্শক রেহেনা খাতুন বলেন, হারিয়ে যাওয়া লাঠিখেলার কথা শুনেছিলাম। আজ প্রথম দেখলাম। গ্রাম
বাংলার ঐতিহ্য যে কত সুন্দর তা না দেখলে বোঝানো যাবে না। লাঠিখেলা খুবই উপভোগ করছি। খুবই
ভালো লাগছে।
ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত লাঠি খেলোয়াড়রা জানান, তারা বিভিন্ন
জায়গায় লাঠি খেলার প্রদর্শনী করে থাকেন। এ খেলার মাধ্যমে লোকদের যেমন আনন্দ দেন তেমনি নিজেরাও
আনন্দ পান। কিন্তু এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে লাঠি খেলার আয়োজন করা হলে তাদের অনেক
লোকসান হয়। তাই লাঠি খেলাকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে সরকারি সহায়তার দাবি জানান তারা। তারা
মনে করেন এতে মানুষকে আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখা সম্ভব ।
আয়োজক দয়াল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লাব্বুল বাশার জানান, গ্রামের সাধারণ মানুষদের কিছুটা
বিনোদন আর হারানো ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এই আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ
আয়োজনে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলাসহ আশপাশের উপজেলা থেকে ১২টি লাঠিয়াল দল এই খেলায়
অংশ নেয়। প্রতি বছর এধারা অব্যাহত থাকবে।