শৈলকুপার সরকারি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কলেজের
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিয
স্টাপ রিপোটার: ঝিনাইদহের শৈলকুপার
সরকারি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কলেজে অধ্যক্ষ আ কা ম মামুনুর রহমানের
বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।তিনি
অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার শুরু থেকেই নানা অনিয়ম তার রন্ধ্রে
রন্ধ্রে দানা বাধতে শুরু করে তবে কলেজটি সম্প্রতি জাতীয়করণ ঘোষণা
হওয়ার সাথে সাথে তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেন, জড়িয়ে পড়েন
নানা অনিয়মে। এমনকি তার নিজের নিয়োগের ক্ষেত্রেও অনিয়মের প্রশ্ন
উঠেছে ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,উপজেলার ভাটই বাজার এলাকায় কুষ্টিয়া-
খুলনা মহাসড়কের পাশেই কলেজটির অবস্থান। এই কলেজে তিনি অধ্যক্ষ
হিসাবে যোগদান করেন।অধ্যক্ষ মামুনুর রহমান প্রায়ই কলেজে
অনুপস্থিত থাকেন এরপর কোন একদিন ইচ্ছামত উপস্থিত হয়ে বিগত
দিনের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। বিগত দিনে ক্ষমতাসীন দলের
ছত্রছায়ায় তিনি শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারিদের দীর্ঘদিন জিম্মি
করে রেখেছিলেন, এত অনিয়মের পরেও ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে
পারতেন না। বর্তমান ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সাথে সাথে রূপ পরিবর্তন
করে স্থানীয় দলের নেতাদের সাথে আতাত করে নতুন বুদ্ধি
আটছেন।এদিকে তার শিক্ষাগত যোগ্যতায় এইচএসসি
কম্পার্টমেন্টাল-১৯৮৯, আবার পাস কোর্স থেকে পাস। নিয়োগ
বিধিতে আছে, যদি কেউ পাস কোর্স থেকে পাস করে তাহলে যে
কোন একটিতে ১ম শ্রেনি থাকা বাধ্যতামূলক কিন্তু তার শিক্ষা
জীবনে কোন ১ম শ্রেণী না থাকলেও অধ্যক্ষ হিসাবে নিয়োগ পান। এত
নিয়মনীতি উপেক্ষা করে কিভাবে নিয়োগ পেল তা নিয়েও কথা উঠেছে।
আরো জানা যায়,কলেজটি ২০২৪ সালের জানুয়ারীতে জাতীয়করণ হয়।
এরপর ব্যাকডেটে নিয়োগের মহাৎসোব শুরু হয়ে যায়। ব্যাকডেটে
বিভিন্ন সময়ে ২৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ভূয়া সার্কুলারের
মাধ্যমে ২০১৯ সালে মৃত ও অন্যত্র চলে যাওয়া ডিগ্রী শিক্ষকের পদে ২০১৫
ও ২০১৮ সালে অবৈধভাবে ব্যাকডেটে নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের
টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।এছাড়াও ওই কলেজের অনার্স সমাজ বিজ্ঞান
বিভাগের প্রভাষক নাসিমা খাতুনের স্বপদ থেকে সরিয়ে তাকে অফিস
সহকারীতে নিয়োগ দিয়ে উক্ত পদে হাফিজুর রহমানকে ব্যাকডেটে
নিয়োগ দিয়ে ২২ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।শুধু হাফিজুর রহমানই নন
অনার্সে এমন অনেক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ
টাকা।
এছাড়াও সাবেক সভাপতির ( আব্দুল হাই এমপি) স্বাক্ষর জাল করে অধ্যক্ষ
টিউশন ফিসের ১২ লক্ষ টাকা চেকের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে আত্মসাৎ
করেন।করোনাকালীন সময়ে সরকার থেকে ফেরতকৃত এইচএসসি
শিক্ষার্থীদের কেন্দ্র ফি র ৪০০ জনের ৪০০ টাকা করে রেখে দিয়ে মোট ১
লক্ষ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।কলেজ জাতীয়করণের পরে ফান্ডের
উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরও ৬০ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে তুলে
আত্মসাৎ করেছেন।বিভিন্ন সময়ে ব্যক্তিগত ধারের টাকা কলেজ ফান্ড
থেকে পরিশোধ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক বলেন, মূল কপির উপর
টেম্পারিং করে সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে
২০২৩ সালে ২৯ জনকে অবৈধ নিয়োগ দিয়েছেন।
২২ আগস্ট ২০১৬ সালে দৈনিক খবর পত্র পত্রিকার ১৪ জন নিয়োগের
সার্কুলার টি জাল করে একই ডেটে সোনালী খবর পত্রিকায় টেম্পারিং
করে ১৯ জন কে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১০ আগস্ট ২০১৭ সালে দৈনিক
ইত্তেফাক পত্রিকার নিয়োগের সার্কুলার টি জাল করে একই ডেটে
একই পত্রিকা টেম্পারিং করে ১২ জন শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োাগ দেয়া
হয়েছে। ১০ আগস্ট ২০১৭ দৈনিক খবর পত্র পত্রিকার ১২ জন শিক্ষক
নিয়োগের সার্কুলার টি জাল করে একই ডেটে সোনালী খবর পত্রিকা
টেম্পারিং করে ৮ জন শিক্ষক ও ৪ জন কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছে।১০
জানুয়ারি ২০১৫ দৈনিক সমকাল পত্রিকায় বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল
ডিগ্রী কলেজের কোন সার্কুলার না থাকলেও তিনি ওই পত্রিকার
টেম্পারিং করে ১১ জন শিক্ষক ও তৃতীয় শ্রেণির ৭ জনকে নিয়োগ
দেন। যা মূল পত্রিকার সাথে কোন মিল নেই।
দৈনিক সোনালী খবর পত্রিকার ভুয়া সার্কুলার দেখিয়ে একজন
কম্পিউটার অপারেটর একজন স্টোরকিপার একজন এমএলএসএস নিয়োগ
দেওয়া হয়েছে।। যার কোন সার্কুলারই নেই ঐ পত্রিকায়। এভাবে অবৈধ
নিয়োগের মাধ্যম ২ থেকে ৩ কোটি টাকা নিয়োগ বানিজ্য করে
আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন শিক্ষক,
কর্মকর্তা, কর্মচারী ও এলাকাবাসী।
সরকারি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কলেজের উপাধ্যক্ষ আশরাফুজ্জামান মল্লিক
জানান, আমি কোন দুর্নীতির সাথে জড়িত নেই এবং আমি কখনোই
কোন নিয়োগ বোর্ডে ছিলাম না।
সরকারি বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল কলেজে অধ্যক্ষ আ কা ম মামুনুর রহমান
মোবাইল ফোনে একাধিকবার মোবাইল করেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।