বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণ সমন্বয়কারী মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, ‘এটি একটি অভূতপূর্ব ও হতাশাজনক বিষয়। এর মানে আগামী বছরটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক কর্মসূচির বছর হতে যাচ্ছে।’তিনি আরও বলেন, ত্রাণ সহায়তার দরকার হবে এমন মানুষের সংখ্যা বর্তমানে প্রায় ৩৪ কোটি। এটা একটা নতুন রেকর্ড অর্থাৎ এর আগে একসঙ্গে এত মানুষের ত্রাণ সহায়তার দরকার হয়নি। গত এক বছরে নতুন করে ছয় কোটি মানুষ যোগ হয়েছে।
গ্রিফিথস বলেন, সারা বিশ্বে ত্রাণ সহায়তার চাহিদা এত দ্রুত হারে বাড়ছে, যা চমকে দেয়ার মতো এবং এটা ২০২৩ সালেও অব্যাহত থাকবে। এর কারণ হিসেবে ইউক্রেন যুদ্ধ ও আফ্রিকার খরার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
জাতিসংঘ ও এর অংশীদার সংস্থাগুলো বলছে, এসব মানুষের জন্য ৫১.৫ বিলিয়ন তথা ৫ হাজার ১৫০ কোটি ডলারের সাহায্যের দরকার হবে। বিশাল পরিমাণ এই অর্থের জন্য একটি আবেদন শুরু করেছে সংস্থাগুলো।
জাতিসংঘ এরই মধ্যে সতর্ক করেছে, আধুনিক ইতিহাসের বৃহত্তম বৈশ্বিক খাদ্য সংকট মোকাবিলা করছে বিশ্ব। এ ছাড়াও ১০ কোটিরও বেশি মানুষ সংঘাত ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
জাতিসংঘ উল্লেখ করেছে, ৫৩টি দেশে কমপক্ষে প্রায় ২২ কোটি মানুষ এই বছরের শেষ নাগাদ তীব্র খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হবে বলে মনে করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে সাড়ে চার কোটি অনাহারের ঝুঁকির মুখোমুখি। পাঁচটি দেশ এরই মধ্যে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে এবং এর ফলে মানুষ মারা যাচ্ছে।
ওই দেশ হচ্ছে: আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, হাইতি, সোমালিয়া ও দক্ষিণ সুদান। চলতি বছর তাদের জনসংখ্যার কিছু অংশ বিপর্যয়কর ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছে। কিন্তু এখনও দেশব্যাপী দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেনি সরকার।
এ ছাড়াও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে খাদ্য রফতানি ব্যাহত হয়েছে। এর ফলে ৩৭টি দেশের প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ বর্তমানে অনাহারে ভুগছে। গত বছরের তুলনায় এই বছরের আবেদন ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এদিকে একাধিক সংকটের কারণে দাতাদের অর্থায়ন এরই মধ্যে ব্যাপক হারে কমেছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে ২০২২ সালে সাহায্যের আবেদনের প্রায় ৫৩ শতাংশ তহবিল পায়নি জাতিসংঘ। এ পরিস্থিতিতে আগামী বছরের জন্য এই বিশাল তহবিল জোগান দেয়া ‘চ্যালেঞ্জিং’ হবে।
ইএফ